চা শ্রমিক ডটকমঃ সিলেটে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত চিকিৎসকের আশপাশে থাকা ১৬ জনের কারো শরীরে করোনা ধরা পড়েনি। তাদের সবার করোনা টেস্ট রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।
এর আগে গত রোববার সিলেটে প্রথম এক চিকিৎসকের শরীরে কোভিড-১৯ ধরা পড়ার পর মানুষের মাঝে এক অজানা ভীতি দেখা দেয়।
এ অবস্থায় আক্রান্ত ওই চিকিৎসক ১৬ জনের একটি তালিকা দেন করোনা পরীক্ষা করার জন্য। এর মধ্যে তার পরিবারের সদস্য, গাড়ী চালক, চেম্বারে কাজে নিয়োজিত লোক ও একটি হাসপাতালে কর্মরতসহ মোট ১৬ জনকে গত বুধবার (০৮ এপ্রিল) সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে স্থাপিত ল্যাবে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয়। তবে পরীক্ষায় তাদের কারো শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েনি।
এর আগেও দু’দিনে সিলেটে মোট ১১৮ জনের পরীক্ষায় সবারই করোনা নেগেটিভ এসেছে। সেই সাথে এই ১৬ জনের শরীরেও করোনা ধরা পড়েনি। এতে অনেকেই নানা প্রশ্ন তুলেছেন।
বিষয়টি জানতে যোগাযোগ করেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক হিমাংশু লাল রায় বলেন- ‘একজনের করোনা পজেটিভ হয়েছে, এর মানে নয় যে তার সংস্পর্শে আসা অন্যদেরও করোনা পজেটিভ হবে।’
ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘কোন ব্যক্তির শরীরে যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকে তাহলে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির পাশে গেলেও এই ভাইরাস অন্যজনের নাও হতে পারে। আক্রান্ত চিকিৎসক ব্যক্তিগত নিরাপত্তা মেনে চলেছেন। যার কারণে তার কাছ থেকে এই ১৬ জনের শরীরে করোনা না ছড়াতে পারে। এছাড়া হয়তো এই ১৬ জনের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও ছিল বেশি।’
এছাড়া তিনি কোভিড-১৯ সম্পর্কে আরেকটি বিষয় বলেন, এক জনের যদি করোনা ধরা পড়ে, তার সাথে যদি আরো ১০০ জন লোক মিশেন সবার করোনা হয়ে যাবে তা এমন নয়। তিনি বলেন, এই রোগটি নতুন। আমরা চীনের বিভিন্ন বিষয় দেখে জেনেছি যে, এই ১০০ জনের মধ্যে ২০ জনের করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের ক্ষেত্রে সংক্রমণ হয় বেশি। এবং যারা বিভিন্ন রোগে ভোগছেন তাদের শরীরে করোনা সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি।
বাকি ৮০ জনের শরীরে কোভিড-১৯ ধরা পড়ে না, কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘তাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে বেশি। এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকার কারণে, করোনা শরীরে প্রবেশ করলেও এক সময় শরীরের সাথে যুদ্ধ করে হেরে যায় এ ভাইরাস।’
সতর্কতা হিসেবে তিনি বলেন, ‘তাদের শরীরে এখন করোনাভাইরাস ধরা পড়েনি, এর মানে নয় যে তারা আর আক্রান্ত হবেন না। ডাক্তার হিমাংশু জানিয়েছেন, এই রোগের উপসর্গ কিংবা পজেটিভ ফলাফল অনেক সময় সাথে সাথে দেখায় না। অনেকের ক্ষেত্রে ১২ দিন কিংবা ১৪ দিন পরে করোনা ধরা পড়ে। সুতরাং তাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে আরো বেশি করে।’
সুত্রঃসিলেট ভয়েচ