শ্রীমঙ্গল উপজেলার সাতগাঁও চা বাগানে মালিক ও শ্রমিকপক্ষের মধ্যে সৃষ্ট জটিলতার সমাধানের লক্ষে ২৪ মে সোমবার স্থানীয় উপ-শ্রম অধিদপ্তরে মালিক-শ্রমিক ও সরকারদলীয় ত্রিপক্ষীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপ-শ্রম পরিচালক নাহিদুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে সোমবার দুপুর ১২ টা হতে বিকাল ৬ টা পর্যন্ত ৬ ঘন্টাব্যাপী দীর্ঘ আলোচনা শেষে উভয়পক্ষের মধ্যে কোন সমাধান হয় নি। ফলে সিদ্ধান্ত ছাড়াই সভাটি পন্ড হয়ে পরে। সভার কোন রেজুলেশন কপি বিতরণ করা হয়নি বলে জানান শ্রমিকরা।
এদিকে সাতগাঁও চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক ইফতেখার আহমদকে চাকুরী হতে প্রত্যাহার করে অবৈধভাবে বহিস্কৃত চা শ্রমিক শ্যামল কুর্মীকে চাকুরীতে বহাল রাখার দাবিতে ৮ দিন ধরে অনির্দিষ্টকালের জন্য শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে বাগানটির চা উৎপাদন।
বাগানের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার লক্ষে বাগান মালিক পক্ষ, শ্রমিক পক্ষ ও সরকারদলীয় ত্রিপক্ষীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাংলাদেশীয় চা সংসদের সিলেট বিভাগীয় চেয়ারম্যান ফিনলে টি কোম্পানীর ভাড়াউড়া ডিভিশনের জিএম গোলাম শিবলী, সাতগাঁও চা বাগান ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী, সহ-সভাপতি পংকজ কন্দ, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দী, বালিশিলা ভ্যালী সভাপতি বিজয় হাজরা, সাধারণ সম্পাদক দেবেন্দ্র বারাইক, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আছকির মিয়া, সাতগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মিলন শীল, ইউপি সদস্য ঈশ্বর কালিন্দী, শ্রীমঙ্গল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুনসহ বিভিন্ন বাগান পঞ্চায়েত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় শ্রমিকপক্ষের দাবি উপেক্ষা করা হয় বলে জানান চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী। তিনি বলেন, বাগান কর্তপক্ষ শ্যামল কুর্মীর বিরোদ্ধে থানায় অভিযোগের নিমিত্তে কালিমালিপ্ত ভাবে চাকুরীচ্যুত করার আপচেষ্টা করছে, যা শ্রম আইনের ২৬ ধারার সম্পূর্ণ পরিপন্থী।
শ্রীমঙ্গলস্থ আঞ্চলিক শ্রম অধিদপ্তরের উপ-শ্রম পরিচালক নাহিদুল ইসলাম বলেন, শ্যামল কুর্মীর উপরে ২৬ ধারা স্থগিত রেখে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব করা হলে শ্রমিকপক্ষ তা কোনভাবেই মানছে না।
চা শ্রমিকরা বলেন, শ্রমিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরনের কারণে সহকারী ব্যবস্থাপক ইফতেখার আহমদ ইতোপূর্বে জাফলং চা বাগান হতে বহিস্কার হয়ে সাতগাঁও চা বাগানে যোগদান করার সাথেসাথেই এখানেও শ্রমিকদেরকে অহেতুক হয়রানী করছেন তিনি। তাই ইফতেখার আহমদকে দ্রুত চাকুরী হতে প্রত্যাহার করা না হলে আরো বৃহৎ আন্দোলনের ঘোষণা দেয় চা শ্রমিকরা।
Leave a Reply