২য় জাতীয় চা দিবস উদযাপন তাৎপর্য ও চেক বিতরণ

স্মরণ সিং (বালিশিরা ভ্যালী)
  • Update Time : রবিবার, ৫ জুন, ২০২২
  • ২১১ Time View

চা শ্রমিক ডটকমঃ মৌলভীবাজার জেলা শ্রীমঙ্গল উপজেলা মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম ৪’ঠা জুন জাতীয় চা দিবস “চা শিল্পের সংকল্প চা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ” মূল প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে চা শ্রমিকদের মাঝে চা দিবস তাৎপর্য তুলে ধরা ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী আওতায় হতে এককালীন ৫০০০/= ( পাঁচ হাজার) টাকা চেক বিতরণ জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজন করা হয়েছে।

আয়োজক মৌলভীবাজার জেলা জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান সভাপতিত্বে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইস্পাহানি টি কোম্পানি জেরিন চা বাগান ডেপুটি ম্যানেজার সেলিম রেজা চৌধুরী বলেন চা বোর্ড ১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৭ সালে বাঙ্গালী মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৪’ঠা জুন প্রথম বাঙ্গালী চা বোর্ড চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান। ৫০০ বছর পূর্বে সেই বনজঙ্গলে চা এর সূচনা আবিষ্কার হয়। চীনে এক রাজা সম্রাট সিনেনসি অসুস্থ হওয়ায় তৃষ্ণা পান জলে একটি পাতা পড়ে গিয়ে পানের পানির রঙ পরিবর্তনে বিভিন্ন পরিক্ষা নীরিক্ষায় জল পান করার ফলে সম্রাটের তৃষ্ণা অসুস্থতা ক্লান্তি তন্দ্রাছন্না দূর হয়ে যায়। পরবর্তীতে তিনি এই পাতা চাষ এর প্রচলন শুরু করতে বলেন। বাংলাদেশ তথা বিশ্বের কাছে একবারে সরল স্বাস্থ্য সম্মত পানীয় হচ্ছে চা। চীনের ডাক্তার ভাষায় চা খান শরীর সতেজ হন অর্থ্যাৎ চা পান করিলে রোগের ঔষদ খাওয়া লাগবে না। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও সরকার এর কাছে চা’ কে জাতীয় পানীয় হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবী জানান।

বিটিআারআই প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ আব্দুল আজিজ বলেন আজ ২ য় চা দিবস এই মাহেন্দ্রক্ষণ দিনটিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালে ৪’ঠা জুনে বাঙালি প্রথম চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে ১৯৫৮ সাল ২৩’ শে অক্টোবর পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন। দায়িত্বকালে জাতির পিতা চা শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত প্রত্যেকটা সেক্টরের চা শ্রমিক ভাইবোনদের অবস্থান সম্পর্কে অবগত হন।১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর তিনি চা শিল্পের প্রসারের জন্য আর্থিক অনুদান,ফ্যাক্টরী খোলা পরিচালনা নানাবিধ চিন্তাভাবনা উদ্দ্যোগ গ্রহণ করেন। তৎকালীন পিটিআরআই পরিবর্তে বিটিআরআই পূর্ণ নামরুপ রাখেন। আপনারা নিশ্চয় জানেন বই পুস্তকে পেয়েছেন উত্তরবঙ্গে জাতির পিতা যখন ডিস্ট্রিক কমিশনার হিসেবে ছিলেন তখন উত্তরবঙ্গে সীমানা ওপারে চা চাষ করা চা ডাল নিয়ে বাংলোতে রোপন করেছিল পরবর্তীতে তা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নিকট দিয়ে চা শিল্পরে প্রসারে কাজ শুরু করেন। চা শিল্পের প্রসারে আইন প্রণয়ন ইন্ড্রাষ্টিয়াল নীতিমালা করে থাকেন যার বাস্তবায়নে আজকের চা শিল্প পেয়েছি। আমরা ১৬৮ বছরে চা উৎপাদনে রেকর্ডভূক্ত উৎপাদন করেছি। এভাবে চলতে থাকলে ১৪০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনে সক্ষম হব।

সভার সভাপতি মৌলভীবাজার জেলার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন আজকে জাতীয় চা দিবস চা শ্রমিকদের খুশির দিন আনন্দের দিন। মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১’ ম বাঙ্গালী চা বোর্ডের চেয়ারম্যান চা শ্রমিকের প্রতি আবেগ ভালবাসা সম্প্রসারিত চা শিল্প। জাতির পিতা ও আজকে আমরা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত সবাই গরীব দুঃখী মেহনতি মানুষের চিন্তা করি। চা শ্রমিকের শ্রম মেধা,ঘাম, রক্তরচিত চা শিল্পের সভ্যতার বিকাশ অর্জন ও অবদান প্রসার আজ চা শিল্প। আজকে বক্তাদের বক্তব্য বিভিন্ন কথাবার্তা উঠে এসেছে তা লিপিবদ্ধ করে আমরা উচ্চ পর্যায়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীসভা পর্য়ায়ে পৌছে দিব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিক আপনাদের জীবনমান উন্নয়ন চিন্তাভাবনা করেন দিনরাত ২৪ ঘন্টা যা আমাদের পক্ষে করা সম্ভব হয় না। তাই তিনি রাজঘাট ইউনিয়ন বর্মাছড়া চা বাগানে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বহুতল বিশিষ্ট সরকারী স্কুল নির্মান করে দিচ্ছেন।আমি উন্নয়ন পথ নকশা নামে তিনটি প্রকল্প গ্রহণ করেছি যা (১ম.২০১৬ -২০২০,২য়.২০১৬-২০২৫,৩য়.২০১৬-২০৩০) সাল পর্যন্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। মৌলভীবাজার জেলায় ১৫৭২৮৭ বর্গ হেক্টর চা বাগান পতিত জমি আছে যা জেলা প্রশাসক কর্তৃক গৃহিত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা গৃহায়ণ প্রকল্প ৩৫০ টি ঘর নিমার্ণ অর্থায়ান করা হয়েছ যা চলমানধীন। স্বাস্হ্য বিষয়ে তিনি বলেন প্রতিটি এলাকায় ইউনিয়নে কমিউনিটি ক্লিনিক আছে সেখান স্বাস্থ্যসেবা নিবেন। পদ্মা সেতু সম্পর্কে বলেন পদ্মা সেতু নির্মাণ এটা আমাদের বাঙ্গালী জাতির অহংকার গর্বের বিষয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাংলাদেশ পুলিশ কথা বললে তিনি বলেন যে কোন বিষয় থাকলে আপনাদের ইউনিয়নে বিট পুলিশিং অফিসার ২ জন নিয়োজিত আছে আপনারা সেখানে অভিযোগ করবেন। আপনাদের কষ্ট করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে থেকে শ্রীমঙ্গল থানায় আসতে হবে না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের যেভাবে ভালবাসে আপনারাও সেভাবে ভালবাসবেন বললে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে হাত উত্তেলনে প্রসারিত করে ও সম্মতি পোষণ করে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সভাপতি জহর তরফদার সঞ্চালনায় জাতীয় চা দিবস চেক বিতরণে উপস্থিত উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তা, উপজেলা আওয়ামিলীগ সভাপতি,সহ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক,বাংলাদেশ চা জনগোষ্ঠী আদিবাসী ফ্রন্ট এর সভাপতি, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, কালিঘাট ও রাজঘাট ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য/ সদস্যা, চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ, চাশ্রমিক ও প্রমূখ।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category