চা শ্রমিক ডটকমঃ মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় প্রতি বছর ন্যায় এ বছর জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত ৯’ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস ” ঐতিহ্যগত বিদ্যা সংরক্ষণ ও আদিবাসী নারী সমাজে ভূমিকা ” মূল প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে বৃহত্তর সিলেট ত্রিপুরা উন্নয়ন পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত মহসিন অডিটোরিয়াম শ্রীমঙ্গল পৌরসভায় র্যালী আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মধ্য দিয়ে আদিবাসী দিবস উদযাপন আয়োজন করা হয়েছে৷
আদিবাসী দিবস শুভ উদ্ধোধক ও প্রধান অতিথি শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদে জননন্দিত চেয়ারম্যান ভানু লাল রায় বলেন আমাদের এখানে ২৯টি নৃ- তাত্বিক জনগোষ্ঠী বসবাস রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যক্তিগত তহবিল হতে নৃ-তাত্বিক জনগোষ্ঠীর জন্য চোখে দেখার মত উন্নয়ন কাজ করে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও আমাদের শ্রীমঙ্গল কমলগঞ্জ উপাধ্যক্ষ ড.মো আব্দুস শহীদ এমপি মহোদয় নির্দেশে আমি যখন খাসিয়া পল্লীতে গিয়েছিলাম তখন উঠার সিড়ি ছিল না( কাঁচা রাস্তা বাঁশ ব্যবহার করত) এখন উঠার জন্য সিড়ি করা হয়েছে। নিজস্ব ভাষা বই সংরক্ষণ( গারো,খাসিয়া,ত্রিপুরা,মনিপুরী,সাদ্রি) রয়েছে। আমি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল সহিত বলতে চাই রাষ্ট্রের ক্ষতি হয় এমন কিছু করা যাবে না।সবার আগে রাষ্ট্রকে বাঁচাতে হবে। রাষ্ট্র যদি ক্ষুদ্র নৃ তাত্বিক জনগোষ্ঠী থেকে আদিবাসী জনগোষ্ঠী হিসেবে রুপান্তর করা যায় তাহলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই আদিবাসী স্বীকৃতি হিসেবে দাবীর প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন। এছাড়া তিনি বলেন ১৯৭১ সালে ” জয় বাংলা” স্লোগান বলে এদেশে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান মুসলিম মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা জয় লাভ করেছে।
বৃহত্তর সিলেট ত্রিপুরা উন্নয়ন পরিষদ সভাপত্বিতে বিশেষ অতিথি বক্তারা বলেন ক্ষুদ্র নৃ তাত্বিক জনগোষ্ঠী, উপজাতি,আদিবাসী আপনাদের কৃষ্টি সংস্কৃতি দিবস উদযাপন সামাজিক অনুষ্ঠান আপনারা ৪১টি জনগোষ্ঠী সংগঠণের মাধ্যমে দাবী আদিবাসী স্বীকৃতি সংহতি প্রকাশ করে উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিতালী দত্ত ও নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান হাজী লিটন আহমেদ,প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি জহর তরফদার, কাথলিক মিশন পাদ্রি ফাদার নিকেলাস বাড়ৈ,খাসি কাউন্সিল জেনারেল সেক্রেটারী এলিসন সুঃঙ,হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ শ্রীমঙ্গল শাখার সভাপতি ডমিনিক সরকার রনি, ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রবীণ শিক্ষক দীপেন্দ্র ভট্টাচার্য, আদিবাসী দিবস উদযাপন সভাপতি জনক দেববর্মা,সাংবাদিক উপজেলা জেলা পর্যায়,স্থানীয় আদিবাসী নেতাসহ প্রমূখ।
আদিবাসী দিবস উদযাপন ও সংগঠণ সভাপতি জনক দেববর্মা বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্দ্যোগে দরিদ্র অসহায় পরিবার মাঝে গৃহ নির্মাণ করে দিচ্ছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় পাশের উপজেলা চুনারুঘাট ত্রিপুরা পল্লীতে তার উল্টো দৃশ্য দেখতে পায়। সেখানে নেই কোন সরকারী সুযোগ সুবিধা বিদ্যুৎ সংযোগ। কিন্তু একই এলাকার অন্য এক পাড়ায় অ-আদিবাসীদের বিদ্যুৎ সংযোগ আছে। পাশাপাশি রেমা কালেঙ্গা বন কর্মকর্তারাও বিদ্যুৎ বাড়িঘর নির্মাণে হয়রানি শিকার নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। এগুলো দেখার দায়িত্ব রাষ্ট্র সরকার না কি অন্য কার? এ রকম বৈষম্য কেন? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনী ইস্তেহারে আমাদের আদিবাসী স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করা হয় নি। আমরা আদিবাসী জনগোষ্ঠী পূর্ব পুরুষেরা ” জয় বাংলা” স্লোগানে ১৯৭১ সালে সবাই মিলে মুক্তিযোদ্ধ করে স্বাধীনতা জয় লাভ ছিনিয়ে এনেছি।
পরবর্তীতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক উচ্ছাসিত মনোরম পরিবেশে (ত্রিপুরা,গারো,খাসি,সাদ্রি)প্রমূখ নাচ গান নৃত্যানুষ্ঠানের মাধ্যমে আদিবাসী দিবস উদযাপন পালন করা হয়েছে।
Leave a Reply