চা শ্রমিক ডটকমঃ মৌলভীবাজার জেলা শ্রীমঙ্গল উপজেলা চা বাগানে চা শ্রমিক মজুরী আন্দোলন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হস্তক্ষেপে চা বাগানে চা শ্রমিকরা চা পাতা তোলা কর্মমূখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। চা শ্রমিকরা চা পাতা তোলার মনোনিবেশ ও মজুরী বেশি পাওয়ার আশায় হাসি খুশি প্রতিযোগিতায় চা পাতা উত্তোলন করতেছে। দৈনিক মজুরী বিষয় নিয়ে নারী চা শ্রমিক আরতি কালিন্দিকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাজিরা( মজুরী)১৭০ টাকায় খুশি ২০০ টাকা হাজিরা( মজুরী) নির্ধারণ করে দিলে আরও খুশি হতাম।
বর্তমানে দ্রব্যমূল্যে উর্দ্ধগতি চালের দাম ৫০ আর ২টাকা, তেলের দাম, আনাজ পাতি( শাক সবজি) দাম অনেক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ যাতে জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে দেই।
নারী চা শ্রমিক মমতা গোয়ালা আন্দোলনরত অবস্থায় চাওয়া পাওয়া বিষয় নিয়ে অন্য চা বাগানে আত্মীয় কাছে জানতে চাইলে আত্মীয় বলেন আমাদের চা বাগানে কোম্পানি পক্ষ থেকে ১০ কেজি চাল ৫০০ টাকা করে সহযোগিতা করেছে। মমতা গোয়ালা বলেন আন্দোলনরত বুধবার ডাকা হয়েছিল টাকা ও রেশন দিবে পরবর্তীতে কমিশন বোনাস থেকে কেটে রাখা হবে বাগান কর্তৃপক্ষ বললে চা শ্রমিকগণ মানতে রাজি হয় নাই ও দুদিনের ছুটির মজুরী টাকা নিতে কেউ রাজি হল না। চা শ্রমিকগণ যেদিন কাজে যোগদান করবে সেদিন থেকে মজুরী নিবে বলে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেন। চা শ্রমিকদের বাগান মালিকপক্ষ কর্তৃপক্ষ যদি সাহায্য হিসেবে টাকা দিলে তারা নিবে বলে জানান ।
চা বাগানে কর্মরত অবস্থায় অন্যান্য চা শ্রমিক নারীদের জিজ্ঞাসা করলে তাঁরাও বলেন বাগান কর্তৃপক্ষ টাকা ও রেশন দিবে তিন কিস্তিতে কমিশন থেকে টাকা কেটে নিবে চা শ্রমিকগণ রাজি হন নাই আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে সম্মতি পোষণ করেন।
সুবর্নি বোনার্জী ও দয়া বোনার্জী নারী চা শ্রমিক বলেন আমরা হাজিরা চা পাতা তোলার পর অতিরিক্ত চা পাতা প্রতি কেজি কত টাকা দিবে তা জানে না। সাহেব বাবু বাগান পঞ্চায়েত সাথে আলাপ করলে তারা বলে অতিরিক্ত চা পাতা কত কেজি তা খাতায় লিখে রাখতে ও আগামী ৩ তিন দিনের মধ্যে আমাদেরকে জানাবে বলে আশ্বাস দিলেন।
চা বাগানে চা শ্রমিকগণ যতটুকু ন্যায্যমূল্যে সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথা তা পাচ্ছে না, কম্বল বিতরণ অনিয়ম, বাগানে বিদ্যুৎ বিল বেশি পরিমাণে কাটা হয় বলে জানান। মাস শেষের সাপ্তাহিক তলফ( পেমেন্ট) ১৫০ টাকা,২০০ টাকা বেশি মিলে না।
অন্য এক নারী চা শ্রমিক ফুলমনি রিকমন বলেন আমাদের জন্য চা বাগানে সেকশনে বিশুদ্ধ পানি খাওয়া টিউবওয়েল নেই পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পাই না বলে। অনেক সময় হাত ভালভাবে না ধুয়ে তাঁরা দুপুরের খাবার আহার করে থাকেন। আমরা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে ভাল চিকিৎসা পাই না।
এ বিষয় বাগানের ডিজিএম,বাবু, বাগান পঞ্চায়েত সহ আলাপ আলোচনা করেছিলেন কোন পদক্ষেপ ব্যবস্থা গ্রহণ করে নি।
বাংলাদেশ চা সংসদের সিলেট বিভাগে সভাপতি ভাড়াউড়া চা বাগান জিএম শিবলী সাদিক সাহেব কাছে জানতে চাইলে বক্তব্য প্রদানে অসম্মতি জানান।
বাংলাদেশ বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তর, শ্রীমঙ্গল,মৌলভীবাজার উপ পরিচালক নাহিদুল ইসলাম নিকট জানতে চাইলে বলেন আমার জানামতে অতিরিক্ত চা পাতা প্রতি কেজি ৩.৫০ টাকা হতে ৮.০০ টাকা পর্যন্ত আছে।অতিরিক্ত চা পাতা প্রতি কেজি পরিমাণ টাকা বাগান ভেদে প্রতি কেজি পরিমাণ চা পাতা টাকার পরিমাণ ভিন্ন বা সমান না। অতিরিক্ত চা পাতা তোলা প্রতি কেজি টাকার পরিমাণ বাগান ম্যানেজার, বাগান পঞ্চায়েত কমিটি ও চা শ্রমিক সমঝোতা করে বিষয়টি সমাধান সুরাহা করতে পারেন।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল নিকট জানতে চাইলে বলেন চা বাগানে মালিকপক্ষের সাথে চুক্তি অনুসারে পরিষ্কারভাবে বলা আছে একজন স্থায়ী শ্রমিক দৈনিক মজুরী যা পাবে অস্থায়ী শ্রমিক সমপরিমাণ দৈনিক মজুরী পাবে। এখানে কম দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। অতিরিক্ত চা পাতা তোলা প্রতি কেজি টাকার পরিমাণ দৈনিক মজুরী ১৭০ টাকার প্রতিদিনই ২০/২২/২৩/২৪ কেজি পাতা তোলা নিরিখে ভাগ দিলে যা আসবে তা কেজি হিসাব করে টাকা দিবে। আমার জানা মতে ফিনলে টি কোম্পানী মজুরী ক্ষেত্রে এ রকম বৈষম্য সৃষ্টি করেছে তিনি আরও বলেন প্রতি চা বাগানে বাগান পঞ্চায়েত কমিটি, চা শ্রমিক মা বোনেরা ছাত্র যুব সবাই বাগান ম্যানেজার সাথে আলাপ আলোচনা করে প্রতি কেজি টাকার পরিমাণ ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা আছে তা বোঝে নেওয়ার আহ্বান জানান।
দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে ৯ অগাস্ট থেকে দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি শুরু করেন চা শ্রমিকরা। চারদিন চলার পরও কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ১৩ অগাস্ট থেকে তারা একেবারে কাজ বন্ধ করে পূর্ণ কর্মবিরতি মজুরী বৃদ্ধির আন্দোলন ও সংগ্রাম চালিয়েছে।
বিগত ২৭/০৮ /২০২২ খ্রিঃ ঢাকাস্থ গণভবনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাথে চা বাগান মালিকপক্ষ আলোচনায় চা শ্রমিকের দৈনিক মজুরী ১৭০ টাকা নির্ধারণ আনুপাতিক হারে বাড়বে ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা চা শ্রমিকরা পাবেন বলে জানান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস।
বাংলাদেশ ব্যাপী মৌলভীবাজার জেলা, হবিগঞ্জ জেলা, সিলেট জেলা , চট্টগ্রাম জেলাসহ সকল চা বাগান চা শ্রমিকরা আন্দোলন অব্যাহতি দিয়ে চা বাগানে কাজে ফিরেছেন।
এদিকে আগামী শনিবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চা শ্রমিকদের সাথে নিজস্ব বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় কথা বলবেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কয়েস।
Leave a Reply