চা শ্রমিক ডটকমঃসিলেটে আসছে শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভূর কাঠের তৈরি পাদুকা
(জুতা)। শ্রীশ্রী হরিভক্তি প্রচারিণী সভা সিলেট শাখার বার্ষিক মহোৎসবে এই জুতা প্রদর্শন করা হবে। জুতাটি বর্তমানে ভারতের নবদ্বীপ শহরের একটি মন্দিরে রাখা আছে।
বৃহস্পতিবার (০২ জানুয়ারি) দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন নিত্যানন্দ প্রভূর চতুর্দশ বংশধর পাঠক সম্রাট প্রভূপাদ শ্রীল নিত্যগোপাল গোস্বামী ও হরিভক্তি প্রচারিণী সভা সিলেট শাখার নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, মহাপ্রভূ শ্রী চৈতন্য দেবের প্রেম-সাম্যের বার্তা প্রধানত নিত্যানন্দ প্রভূ ও তার বংশ পরম্পরার মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রসার লাভ করে। অনেকেই শ্রী চৈতন্য ও নিত্যানন্দকে দুই ভাই মনে করলেও আসলে তাদের পিতৃ পরিচয় ও জন্মস্থান স্বতন্ত্র। নিত্যানন্দের জন্ম ভারতের পশ্চিম বঙ্গের বীরভূম জেলার একচক্রা গ্রামে। আর শ্রী চৈতন্য দেবের জন্ম নদীয়া জেলার নবদ্বীপে।
সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তারা জানান, শ্রী চৈতন্য দেবের সাথে সিলেটের নিবীড় যোগাযোগ ছিল। কারণ, তার পিতামাতা সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণের অধিবাসী ছিলেন। বিভিন্ন প্রয়োজনে তাঁরা নবদ্বীপে বসতি স্থাপন করেন। শ্রী চৈতন্য দেব প্রেম-সাম্যের বাণী প্রচার করেছিলেন। ধনী-দরিদ্র, বর্ণাশ্রম ও নানা প্রকার সংকীর্ণতার গন্ডী ভেঙ্গে পৃথিবীতে প্রেমপূর্ণ মানবজাতি সহাবস্থানের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছিলেন। তাঁর প্রধান পরিকর শ্রী নিত্যানন্দ প্রভূর বংশধর প্রভূপাদ মদনগোপাল গোস্বামী শ্রীশ্রী হরিভক্তি প্রচারিণী সভা প্রতিষ্ঠা করেন। মানুষকে সমাজকল্যাণমূলক কর্ম ও জীবসেবার আদর্শে উদ্বুদ্ধ করাই হরিভক্তি প্রচারিণী সভার কাজ। এই সংগঠনের সিলেট শাখাও দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে।
প্রতিবছর নগরীর মাছুদীঘির পারে নিত্যানন্দের আবির্ভাব তিথিকে কেন্দ্র করে বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এবারও আগামী ৬ থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাছুদীঘির পারে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। এতে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী পরিষদের একাধিক প্রভাবশালী সদস্যবৃন্দ।
এ উৎসবে বাংলাদেশ ও ভারতের অনেক বড় বড় শিল্পী লীলাকীর্তন পরিবেশন করবেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কীর্তনীয়া অঞ্জন উপাধ্যায় ও অদিতি মুন্সী। প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাতে সমাপ্তি পর্যন্ত প্রসাদ পরিবেশন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, এবারের সম্মেলনের প্রধান আকর্ষণ শ্রী চৈতন্য দেবের কাঠের তৈরি পাদুকা বা জুতা প্রদর্শন। সিলেট তথা বাংলাদেশের ভক্তবৃন্দের জন্য নবদ্বীপ থেকে এই পাদুকা নিয়ে আসা হচ্ছে। এজন্য বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের অনুমতি নেয়া হয়েছে এবং পুলিশ প্রশাসন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যবস্থা করার আশ্বাসও দিয়েছে।ভক্তরা ৮ থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই পাদুকা দেখতে পারবেন। এতে তারা সিলেটবাসীসহ দেশের মানুষকে নিমন্ত্রণ জানিয়েছেন এবং সবার সার্বিক সহযোগিতাও চেয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, হরিভক্তি প্রচারিণী সভা সিলেট শাখার সভাপতি নরেন্দ্র দে, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী দেবদাস রায়, পূজা উদযাপন পরিষদ সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও সভার সদস্য অ্যাডভোকেট রঞ্জন ঘোষ, হরিভক্তি প্রচারিণী সভার প্রচার সম্পাদক বনমালী দত্ত, সদস্য রাখাল দে, বিমলেন্দু দে, স্থপতি জিষ্ঞু কুমার দাস, ঝুটন দাস, বিধু চৌধুরী, অমিত দে, অমিত দত্ত, মিঠু দেব, বলরাম বণিক, দূর্লভ তালুকদার, সুরঞ্জিত রায় সিন্টু, অনিন্দ্য দাস, বিপ্রজিৎ দত্ত শুভ প্রমুখ।
Leave a Reply